বিষণ্ন মানুষের ১১ টি বৈশিষ্ট্য
আজকের পৃথিবীতে ক্রমেই বিষণ্ন মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আপনার আশেপাশে অনেকেই হয়তো আছে যারা হয়তো প্রচুর হাসে আনন্দে থাকে, অন্যকে মাতিয়ে রাখে, কিন্তু ভিতরে ভিতরে তারা প্রচুর বিষণ্ন থাকে। কে জানে! হয়তো আপনি নিজেও থাকেন।
আমরা নিজেদের অনুভূতিকে দমিয়ে রাখি এবং কাছের মানুষদের সাথে শেয়ার করি না। এবং একটা কেবলই সমস্যাটাকে বাড়িয়ে তোলে। তারপরেও সবারই বিষণ্ন মানুষদের এই সমস্যাগুলো সম্পর্কে জানা উচিত এবং আশেপাশের মানুষদের দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। হয়তো আপনিই একজন বিষণ্ন মানুষকে সহায়তা করতে পারবেন, তবে তার আগে তো বুঝতে হবে যে সে বিষণ্নতায় ভুগছে।
বিষণ্ন মানুষদের ১১টি বিশেষ বৈশিষ্ট্যঃ
v ১) তারা কিছুতেই মনকে শান্ত করতে পারে না।
তাদের চিন্তাগুলো অনেক গভীর, দ্রুত এবং যুক্তিনির্ভর হয়। ফলে তারা নিজের মনকে প্রবোধ দিতে পারে না।
v ২) তারা তাদের অনুভূতিকে আড়াল করে।
ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষ তার অনুভূতি আড়াল করতে অভ্যস্ত হয়। তাই তাদের কৃত্রিম হাসির আড়ালে যে মুড সুইং ঘটে সেটা ধরা বেশ কষ্টকর।
v ৩) তারা সবকিছুরই অর্থ বা কারণ বা সার্থকতা খুঁজে বেড়ায়।
তাই তারা প্রায়ই বুঝতে চায় জীবনের মানে কি, বা যা করছে তা কেন করছে বা এই পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্বের সার্থকতা কোথায়।
v ৪) উল্টাপাল্টা ঘুম।
বিষণ্নতায় ভোগা মানুষজনকে ইনসমনিয়ায় ভুগতে দেখা যায়। কেউ কেউ আবার অতিরিক্ত ঘুমায়। মানুষ ৬-৯ ঘণ্টা দিনে স্বাভাবিক ঘুম দেয়। নিয়মিত এর চেয়ে বেশি সময় ঘুমানো মানসির স্বাস্থ্যহানির লক্ষণ।
v ৫) তারা হতাশাবাদী।
বিষণ্নতার সাথে কিভাবে যেন বুদ্ধিমত্তার একটা সম্পর্ক আছে। বিষণ্ন লোকেরা অনেকেই প্রবলেম সলভিং এ বেশ ভালো হয় (কারণ তাদের analytical ability ভালো হয়)। কিন্তু মানসিকতায় তারা হতাশাবাদী হয়ে থাকে।
v ৬) ছেড়ে যাবার ভয়ে ভোগে তারা।
ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষজন তাদের প্রিয়জনদের কাছে যেতে ভয় পায় এই ভয়ে যে প্রিয় মানুষেরা তাদের ছেড়ে চলে যাবে। তারা মূলতঃ প্রিয়জনদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হবার ভয়ে প্রিয়জনদের থেকে দূরে থাকার কষ্টকে আপন করে নেয়।
v ৭) তারা নিজের সমস্যা নিজে দূর করার চেষ্টা করে।
তারা নিজেদের সমস্যা নিজে দূর করার জন্য গান শোনা, একা সিনেমা দেখা, একা একা হাঁটা, নিজেকে একটু সময় দেয়া এভাবে চেষ্টা করে।
v ৮) তারা নানা রকম গল্প বানায়।
বিষণ্ন লোকেরা সচরাচর নিজের ক্ষতবিক্ষত অনুভূতি মানুষের সামনে আনতে চায় না। ফলে তারা তাদের মানসিক অবস্থায় আলোকপাত করতে পারে এমন সামান্য (হয়তো বিষণ্নতায় ভোগা ব্যক্তির জন্য সামান্য নয়) ঘটনাকে আড়াল করার জন্য বড় বড় গল্প বানায়।
v ৯) তারা অল্প কিছু ব্যক্তির কাছে বারবার সাহায্য চায়
কেউ যদি আপনার কাছে বারবার সাহায্য চায় এবং তাকে দেখলে কষ্টে আছে মনে হয়, তাহলে আপনার উচিত তার সাথে ভালোভাবে কথা বলা এবং তার সাথে সম্পর্ক গাঢ় করা, যেন আপনি তাকে মানসিকভাবে সাহায্য করতে পারেন।
একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন। বিষণ্নতাক্রান্ত ব্যক্তি খুব অল্প মানুষের কাছেই তার মনটাকে খুলে কথা বলে। হয়তো আপনিই সেই ব্যক্তি যে তাকে সাহায্য করতে পারেন যেটা অন্য একলক্ষ মানুষও পারবে না। তাই বিষণ্নতায় ভোগা ব্যক্তির মানসিক শক্তি হবার সুযোগ পেলে সেটা গ্রহণ করুন।
একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন। বিষণ্নতাক্রান্ত ব্যক্তি খুব অল্প মানুষের কাছেই তার মনটাকে খুলে কথা বলে। হয়তো আপনিই সেই ব্যক্তি যে তাকে সাহায্য করতে পারেন যেটা অন্য একলক্ষ মানুষও পারবে না। তাই বিষণ্নতায় ভোগা ব্যক্তির মানসিক শক্তি হবার সুযোগ পেলে সেটা গ্রহণ করুন।
v ১০) খাদ্যাভ্যাস বদলে যায়।
বিষণ্নতায় ভোগা ব্যক্তিরা হয় খাওয়া অনেক বাড়িয়ে দেন বা অনেক কমিয়ে দেন।
v ১১) বিষণ্নতা সৃজনশীল মানুষের জ্বালানি।
অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিই বিষণ্নতায় ভুগতেন। বিষণ্নতাকে জ্বালানি বানিয়ে পৃথিবীতে অনেক বিখ্যাত সাহিত্য, গান, উপন্যাস রচিত হয়েছে। কষ্ট অনেক সময় অনুপ্রেরণা হয়ে থাকে। এ কারণেই বিখ্যাত ব্যক্তিদের মাঝে আত্মহত্যার সংখ্যাও অনেক বেশি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন